Durga Puja 2025: তারিখ সংক্ষিপ্তসার
মহালয়া: রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মহা ষষ্ঠী (Maha Shashthi): রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মহা সপ্তমী (Maha Saptami): সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মহা অষ্টমী (Maha Ashtami): মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মহা নবমী (Maha Navami): বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
বিজয়া দশমী (Vijaya Dashami): বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
Durga Puja ২০২৫: বিশদ আলোচনা
১. ভূমিকা: পাণ্ডবীত থেকে প্যান্ডেল-শোভা
দূর্গা পূজা হিন্দু ক্যালেণ্ডারে আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর–অক্টোবর) উদ্যাপিত একটি প্রধান উৎসব। এটি শারদীয় নবরাত্রির অন্তর্ভুক্ত কিন্তু বাংলার দুর্গোৎসব—দূর্গাপুজোর সময় কাটায় এক অসামান্য সামাজিক ও শিল্পসৃজনশীল পরিপ্রেক্ষিত । কলকাতা ও অন্যান্য শহরে প্যান্ডেল সংস্কৃতি এক আধুনিক শিল্পযজ্ঞে পরিণত হয়েছে—বিশাল থিম-ভিত্তিক স্থাপনাবলি, আলো–সাজ–সৌন্দর্যে ভরা । আবার, প্রথাগত বাড়ির পুজোয়ও আদ্যিকালের শোভা বজায় থাকে।
২. দিনের সারি ও প্রসঙ্গ বিশেষ
মহালয়া (২১ সেপ্টেম্বর)
এটি দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা, দেবীর আগমনীর বার্তা বয়ে আনে।
“চণ্ডীপাঠ” দ্বারা মহাশক্তি জাগরণের আয়োজন করা হয় এবং পূর্বপুরুষদের স্মরণে ত্রিপর্ণ এবং তর্পণ করা হয় ।
মহা ষষ্ঠী (২৮ সেপ্টেম্বর)
“কলপরম্ভ”-এর মাধ্যমে পূজার প্রস্তুতি এবং দেবীর বোধন অনুষ্ঠান হয়। প্যান্ডেলের স্থাপন, প্রতিমা প্রদর্শনের সূচনা — সবই এই দিনে ।
মহা সপ্তমী (২৯ সেপ্টেম্বর)
“নবপত্রিকা” বা “কলাবৌ” পূজা: নবদ্যুতি প্রতীকে, কলা গাছকে দেবীর সঙ্কেত হিসেবে পূজা করা হয় ।
মহা অষ্টমী (৩০ সেপ্টেম্বর)
এই দিনে “কুমারী পূজা” (শুদ্ধ কন্যাকে দেবীরূপে আরাধনা), এবং “সন্ধি পূজা”—অষ্টমী ও নবমীর সংযোগে দুর্গার মহাসংগ্রামের মুহূর্ত চিহ্নিত—উল্লেখযোগ্য । Sandhi Puja–কে সবচেয়ে পবিত্র মুহূর্ত হিসেবে গণ্য করা হয় ।
মহা নবমী (১ অক্টোবর)
মহা আরতি, হোম, শক্তির বরণ—সার্বিক পূজার পরম আবেগের এক মুহূর্ত। এছাড়া “অযু্ধ পূজা”–ও অনেক জায়গায় পালন করা হয় ।
বিজয়া দশমী (২ অক্টোবর)
সিন্দুর খেলা (Sindoor Khela), প্রতিমা বিসর্জন, “বিজয়া মিছিল”—এই সব সামাজিক ও ধর্মীয় আচার খুব আনন্দময় মুহূর্ত। বিজয়া দশমীকে ‘ভালো ও মন্দের লড়াইয়ের জয়’ হিসেবে দেখা হয় ।
—
৩. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আকার
প্যান্ডেল ও শিল্প: কলকাতায় তখন প্রায় 3,000-এর বেশী প্যান্ডেল পরিদর্শন করা যায়; থিম এবং নান্দনিকতায় প্রতিযোগিতা চালু থাকে ।
পারিবারিক মিলন ও ভোগ: পরিবার-পরিজন মিলনের উৎসব, একে অপরের বাড়িতে ভোগ ভাগাভাগি—চাল, পায়েস, মিষ্টান্ন–সব আসে।
নৃত্য ও সঙ্গীত: বিশেষ করে ‘ধুনুচি নৃত্য’ (Dhunuchi Nritya) এবং ‘ঢাক’–এর ছন্দে পূজা গর্জায়, যা সমগ্র উৎসবকে প্রাণবন্ত ও আবেগঘন করে তোলে ।
৪. অঞ্চলভিত্তিক বৈশিষ্ট্য
কলকাতা: থিম-প্যান্ডেল, আর্ট ইনস্টলেশন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড–সাথে মিলেমিশে এই শহরের দুর্গোৎসব বিশ্বমানের একটি উৎসব হয়ে উঠেছে ।
বসিরহাট: পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দুর্গাপূজার কেন্দ্র; ভিড়, জৌলুস এবং নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের ঐতিহ্য এক অনন্য চিত্র দেয় ।
অন্যান্য রাজ্য: অসম, ওড়িশা, ত্রিপুরা—প্রতিটি অঞ্চলে নিজস্ব ঐতিহ্য ও ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পূজা উদযাপিত হয় ।
৫. দৈনন্দিন জীবনে দুর্গাপুজোর প্রভাব
সরকারি ছুটি: অনেক রাজ্যে বিদ্যালয়-ব্যাংক-অফিস বন্ধ থাকে; বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে ।
প্রস্তুতি ও পরিচালনা: কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধকালীন সময়ে সামাজিক সম্মেলন; পুলিশ ও প্রশাসন প্যান্ডেল নিরাপত্তা, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়—যেমন কোলকাতা শহরে শুরু হয়েছে “pandAL recce” পরিকল্পনা ।
Durga Puja ২০২৫ ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে মূল পাঁচ পূজার দিন—শষ্ঠী থেকে রাতমী পর্যন্ত—২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত পালিত হবে। এই দিঘল বিলাসপূর্ণ উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, বরং শিল্প, সংস্কৃতি, সামাজিক বন্ধন ও আবেগের এক অপূর্ব মিলনস্থল। প্রতিটি দিন, প্রতিটি আচার, প্রতিটি ঘন্টার একটি বিশেষ অর্থ এবং অনুভূতি নির্ভর, যা বাংলা সংস্কৃতিতে এক অদম্য আনন্দ-ধারা সৃষ্টি করে।
Add Comment