বসন্ত পঞ্চমী (Vasant Panchami বা Basant Panchami) ২০২৬ সালে পড়ছে: শুক্রবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৬
দূর্গা পূজা ২০২৬ সাল: মূল পাঁচ দিন — ষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী (Vijaya Dashami) — পালিত হবে নিম্নরূপ:
মহা ষষ্ঠী (Maha Shashthi): ১৭ অক্টোবর ২০২৬ (শনিবার)
মহা সপ্তমী (Maha Saptami): ১৮ অক্টোবর ২০২৬ (রবিবার)
মহা অষ্টমী (Maha Ashtami): ১৯ অক্টোবর ২০২৬ (সোমবার)
মহা নবমী (Maha Navami): ২০ অক্টোবর ২০২৬ (মঙ্গলবার)
বিজয়া দশমী (Vijaya Dashami) / দুর্গা বিসর্জন: ২১ অক্টোবর ২০২৬ (ব quarta — বুধবার)
বিস্তারিত: Durga Puja 2026 ও Basant Panchami নিয়ে বিশদ আলোচনা
নিচে Durga Puja এবং Basant Panchami তে অন্তর্ভুক্ত উৎসব, রীতি, গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক দিক, অনুষ্ঠান, খাদ্য, সমাজ–সংস্কৃতি প্রভৃতি নিয়ে বিশদ আলোচনা উপস্থাপন করা হলো।
১. ভূমিকা ও উৎসবের পটভূমি
দূর্গা পূজা
এই উৎসব ভারতের অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব, বিশেষ করে বাংলা, ওড়িশা, আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ত্রিপুরায় ব্যাপকভাবে পালিত হয়। দুর্গা দেবীর মহিষাসুরকে বিধ্বস্ত করা, অন্ধকারের উপর আলোর (অপমনের উপর শিক্ষার) বিজয়কে প্রতিনিধিত্ব করে এটি ।
বাসন্ত পঞ্চমী
বসন্তের আগমন উদযাপন করে, সরস্বতী দেবীর আরাধনা এই দিনে করা হয়। জ্ঞান-শিল্পের দেবী হিসেবে সরস্বতীকে স্মরণ করে শিক্ষার্থী ও শিল্পাচারীরা বিশেষভাবে এই দিন পালন করেন ।
২. নির্দিষ্ট তারিখ ও পঞ্চাং তথ্য
Durga Puja ২০২৬
Mahalaya — ১০ অক্টোবর (শনিবার) সংগীত ও পূর্বপুরুষ আরাধনায় দিনটি উদ্যাপন করা হয় এবং দেবী দুর্গা পৃথিবীতে আগমন করেন স্বর্গ থেকে।
ষষ্ঠী — ১৭ অক্টোবর: অতীত থেকে পাওয়া ঐতিহাসিক নিয়ম অনুযায়ী দৃষ্টিপূজা এবং দেবীর আদ্যাবাস থিতানোর দিন।
সপ্তমী — ১৮ অক্টোবর: নবপত্রীকা পূজা— নবীনারূপে দেবীর অস্তিত্বে ইতিহাসের নতুন অধ্যায় উদ্বোধন।
অষ্টমী — ১৯ অক্টোবর: সংধি পূজা ও কুমারী পূজা অন্যতম প্রধান ধার্মিক আচার। এই দিনে দেবী একটি কন্যা রূপে পূজিত হন, যা শুদ্ধতার ও শৈশবের প্রতিনিধিত্ব করে।
নবমী — ২০ অক্টোবর: মহা আরতি ও শেষ হাভা, দেবীর শক্তির পূর্ণ প্রদর্শন।
দশমী (বিজয়া) — ২১ অক্টোবর: পূজার শেষ দিন, দেবীর বিসর্জন, সিন্দূর খেলা, প্রভৃতি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দুই ঈদ মিলিত সাংস্কৃতিক আড্ডা ও পারিবারিক সম্প্রীতির দিন।
Basant Panchami 2026
২৩ জানুয়ারি, শুক্রবার (Magha মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি)। শিক্ষার্থী ও পরিবারের সদস্যরা হলুদ পরিধান করেন, বই-পেন্সিল সরস্বতীর সামনে রেখে আশীর্বাদ লাভ করেন। স্কুল-কলেজ, মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
৩. প্রতিটি দিন বিশেষ আচার ও অনুষ্ঠান
Mahalaya (১০ অক্টোবর):
“চণ্ডীপাঠ” শ্রবণ করা হয়, যা রুদ্রনাম, মুন্ডমালিনী সহ মহান পাঠজ্ঞান নিয়ে শুরু।
পিতা-পিতামাতা, পূর্বপুরুষদের স্মরণে তর্ঘণ ও পিতৃদক্ষিণা প্রদান করা হয়।
ষষ্ঠী (১৭ অক্টোবর):
দেবীর পর্দাআচরণ, বোধন অনুষ্ঠান যা দেবীর চোখ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তাঁর আগমনকে ঘোষণা করে।
প্যান্ডেল উদ্বোধন, স্থাপনা ও সংস্কার-সমাপ্তি।
সপ্তমী (১৮ অক্টোবর):
নবপত্রিকা পূজা, যেখানে নবগ্রন্থের পত্রিকার সঙ্গে রাখানো হয় নবস্থাপিত ক্ষেত্রে।
কলাবৌ পূজা (কলাবৌকে দেবীর উপমা রূপে পূজা)।
অষ্টমী (১৯ অক্টোবর):
কুমারী পূজা: একটি মেয়েকে দেবীর মতো বন্দনায় রাখা।
সংধিপূজা: অষ্টমী ও নবমীর সম্মিলনী মুহূর্তে সংধিপূজায় শক্তির সৃষ্টি এবং দেবী চণ্ডমুণ্ডার রূপ ধারণ করেন।
নবমী (২০ অক্টোবর):
মহা আরতি: সকল একত্রে দেবীর উদ্দেশ্যে সর্বোচ্চ পূজার্ঘ।
রাজহারা বা “দূর্গা বালিদিন” অনুষ্ঠানের আয়োজন।
দশমী / বিজয়া (২১ অক্টোবর):
প্রতিমা বিসর্জন: নদীতে বা জলাশয়ে প্রতিমা নিয়ে যাবার মাধ্যমে দেবীর স্বর্গগমন প্রতীকীভাবে।
সিন্দুরখেলা: মহিলারা একে অপরের গালে লাল সিন্দুর খেলেন—বন্ধুত্ব, সম্মান ও বিদায়ে রঙ ছড়ায়।
আনন্দ মিছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খাবারের ব্যবস্থা।
৪. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
Durga Puja:
প্যান্ডেল সংস্কৃতি: ঐশ্বর্যপূর্ণ, থিম-ভিত্তিক বা ঐতিহাসিক প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়, যেমন কলকাতা, বসিরহাট, আসানসোল–দুর্গাপুর এলাকায় বিশাল আয়োজনে রূপ নেয় ।
Cultural Carnivals: আর্ট ইনস্টলেশন, বাদ্যযন্ত্র, নৃত্য, থিয়েটার, ফ্যাশন, ফুড স্টল–সব কিছু মিলে এটি একটি সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
Basant Panchami:
শিক্ষানুরাগী মনোভাব: শিক্ষার্থীরা প্রথম লেখার আশীর্বাদ লাভ করেন।
ঋতুরাবণ: হলুদ পোশাক ও পুরো পরিবেশ, সরস্বতীর শোভা বাড়ায়, শৈক্ষিক ও ঋতুর ঐক্য স্মরণ করিয়ে দেয় ।
৫. ভোগ্য এবং সাংস্কৃতিক উপভোগ
Durga Puja:
ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় খিচুড়ি, পায়েস (মিষ্টান্ন), বিশেষ মোরাগা ভাজা, ১২ রকমের মিষ্টি ও তেহারি; উৎসবমূখর খাদ্যপ্রেমী সংগ্রহ ঘটে।
প্যান্ডেলের চারপাশে প্রচুর ফুড স্টল, রাস্তার খাবারের পরিমণ্ডল জমে ওঠে।
Basant Panchami:
কেশর হালুয়া (হলুদ), কেশর ভাত বা পোলাও অন্যতম প্রিয় প্রাসাদ।
হলুদ রঙের খাবার ও প্রস্তাবনা সরস্বতীদের উদ্দেশ্যে করা হয় ।
—
৬. সময়সূচী ও চিত্রায়ন — সংক্ষিপ্ত চার্ট
উৎসব তারিখ (২০২৬) প্রধান কার্যক্রম
Basant Panchami ২৩ জানুয়ারি, শুক্রবার সরস্বতী পূজা, হলুদ বর্ণের পোশাক ও প্রার্থনা
Durga Puja ১০–২১ অক্টোবর Mahalaya থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত পূজার নিখুঁত আয়োজন
দূর্গা পূজা ও বসন্ত পঞ্চমী উভয়ই হিন্দু ধর্ম-সংস্কৃতির দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। একদিকে বসন্তপঞ্চমী মনে করিয়ে দেয় সরস্বতীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শিক্ষার গুরুত্ব, অন্যদিকে দুর্গা পূজা প্রতীকতান্ত্রিক ও শুভসংকেত বহন করে সত্য ও শক্তির জয়ে। ২৩ জানুয়ারি তারিখে বসন্তের বুকে নতুন আলোর সূচনা, আর অক্টোবরের মাঝামাঝি তিথিতে দুর্গার যোগাযাত্রা—দু’টিরই নিজস্ব তাৎপর্য, রূপ ও প্রভাব রয়েছে। এই উৎসবগুলিতে আপনি পারিবারিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় মিলনের এক অমর অনুভূতি খুঁজে পাবেন।
Durga Puja 2026 ও Basant Panchami নিয়ে বিশদ আলোচনা

Add Comment